Rahul Gazi
Chairman Bhashasoinik Gaziul Haque Institute of Bioscience(BGIB)
মহান স্বাধীনতা দিবসের সূবর্নজয়ন্তী উদযাপনের শুভলগ্নে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান “ভাষাসৈনিক গাজীউল হক ইনস্টিটিউট অফ বায়োসায়েন্স” বগুড়া যাত্রা শুরু করেছে, এ জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের নিকট শোকর গোজর করছি। এই শুভক্ষণে স্মরণ করছি বাংলাদেশ গড়ার কারিগর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ জাতীয় চার নেতাকে। সেই সাথে আরো স্মরণ করছি ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের। এই ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরুর প্রেক্ষাপট সম্পর্কে দুটি কথা না বললেই নয়। আমার বাবা প্রয়াত ভাষাসৈনিক গাজীউল হক ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের অন্যতম একজন নেতা ও সংগঠক ছিলেন। তিনি ভাষা আনেদালনে ২১শে ফেব্রæয়ারী আমতলায় যে সভা অনুষ্ঠিত হয় সেই সভার সভাপতিত্ব করেন এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন এবং এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর বিশ^বিদ্যালয়ের সভায় উপস্থিত সকল ছাত্র স্বতঃস্ফুর্তভাবে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের জন্য আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে। তিনি ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে বগুড়ার মুক্তিযোদ্ধা হাই কমান্ড ছিলেন। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং আওয়ামীলীগ সরকারের সাথে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছেন। তিনি গত ১৭ জুন ২০০৯ তারিখে শেষ নি:শ^াস ত্যাগ করেন। তাঁর ইচ্ছামত বগুড়াতে তার বাবা (আমার দাদা) শাহ মোহাম্মদ সিরাজুল হক চিশ্তী (রহ:) এর মাজারের পাশে শায়িত রয়েছেন। আমার পরিবারের সকল সদস্যগনের একটা সুপ্ত ইচ্ছা ছিল যে, বগুড়ার কৃতি সন্তান, বগুড়ার গর্ব ও অহংকার মহান ভাষাসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজীউল হকের স্মরণে বগুড়াবাসীর জন্য একটা কিছু করা, যা জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য হয়ে থাকবে। এ লক্ষ্য নিয়ে পারিবারের সদস্য যেমন আমার মা, বোন, আমার সহধর্মিনী, আমার দুই মেয়ে) নিকটাত্মীয়, বন্ধু শুভানুধ্যায়ীরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একাধিকবার একত্রিত হই। অনেক আলোচনা পর্যালোচনা এবং বিচার বিশ্লেষন করে সকলে মিলে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে, বৃহত্তর বগুড়ার কোন বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এখানে একটি এগ্রিকালচার বেস্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যায়। এই আকাংখাকে সামনে রেখে বগুড়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করলে সকলের সহযোগিতায় আশ^াস পাওয়া যায়। এরপর প্রাথমিকভাবে ইনস্টিটিউট পরিচালনার জন্য আমাকে প্রতিষ্ঠান চেয়ারম্যান করে একটি প্রাথমিক গভর্নিং বডি গঠন করা হয়। গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রেজুলেশন নিয়ে যথারীতি নিয়মানুযায়ী অনুমতির জন্য রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়। গত ০৭/০৩/২০২১ ইং তারিখে ২৭০৮/১৭০/কপ, নং স্মারক মোতাবেক রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে “ভাষাসৈনিক গাজীউল হক ইনস্টিটিউট অফ বায়োসায়েন্স” বগুড়াকে পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক এর ২৮/০৭/২০২১ ইং তারিখের ২৭২৬/১৭৭/কপ স্মারক নং মোতাবেক প্রাথমিকভাবে ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে চারটি বিভাগে (বি.এসসি. ইন এগ্রিকালচার, বি.এসসি. ইন ফিশারীজ, বি.এসসি. ইন মাইক্রোবায়োলজি, বি.এসসি. ইন ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্সেস) অনার্স শ্রেনীতে প্রতিটি বিষয়ে ৪০জন করে সর্বমোট ১৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি প্রদান করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির পাঠদানসহ সমস্ত কার্যক্রম ভাষাসৈনিক গাজীউল হক সড়ক, নমাজগড়, বগুড়ায় ভাষাসৈনিক গাজীউল হকের নিজস্ব বাসভবন “ভাষানীড়” এ চলতে থাকবে। পরবর্তিতে সুন্দর মনোরম পরিবেশে নিজস্ব জায়গায় প্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তরিত হবে। সেখানে তৈরি হবে দৃষ্টিনন্দন “ভাষসৈনিক গাজীউল হক ইনস্টিটিউট অফ বায়োসায়েন্স” বগুড়া কমপ্লেক্স। এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পথ পরিক্রমায় যারা বিভিন্নভাবে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন তাঁদের প্রতি আমার অভিনন্দন ও সশ্রদ্ধ সালাম। উল্লেখ্য যে, ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় সূধিজন, বিশেষকরে বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: মজিবর রহমান মজনু ভাই, সাধারণ সম্পাদক মো: রাগেবুল আহসান রিপু ভাই, বগুড়া পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর ও প্যানেল চেয়ারম্যান জনাব মো: নুরুল আমিন ভাই, সরকারি আজিজুল হক কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর সামছ্-উল আলম জয় (অব:), সহ সকলের মেধা বিচার-বুদ্ধি ও পরামর্শ দিয়ে সার্বিক সহযোগীতা করায় তাদের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। একইসাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ- ভিসি, প্রো ভিসি, সিনেট সদস্য, কলেজ পরিদর্শক এবং পরিদর্শন টিমের সকল সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এছাড়া যারা সামনে না এসে পিছন থেকে ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন তাদের সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। এই প্রতিষ্ঠানকে একটি বিশ্বমানের উন্নত প্রতিষ্ঠান বিনির্মানে সর্বদা সচেষ্ট থাকবো। প্রকিষ্ঠানের লক্ষ্য হবে গুনগত মানসম্পন্ন মেধাবী, চৌকষ শিক্ষিত নাগরিক তৈরি করা। এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যবসা করা নয়। এই প্রতিষ্ঠানকে উচ্চমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করছি। রাহুল গাজী চেয়ারম্যান ভাষাসৈনিক গাজীউল হক ইনস্টিটিউট অফ বায়োসায়েন্স। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান ভাষাসৈনিক গাজীউল হক সড়ক, নামাজগড়, বগুড়া। মোবাইল নং- ০১৭১১-৫২০৭২১